কালিয়াকৈরে এবার লাইসেন্সের টাকা না পেয়ে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দিল সমিতির নেতারা
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের বাড়ইপাড়া- মহরাবহ আঞ্চলিক সড়কে লাইসেন্সের টাকা না পেয়ে এবার অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সমবায় সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন সিরাজীসহ অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে। এতে ওই সড়কে চলাচলরত স্কুল/ কলেজের শিক্ষার্থী, কারখানা শ্রমিকসহ ভোগান্তিতে পড়েন সাধারন মানুষ। রাস্তায় বের হওয়ার পর দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে রিকশা না পেয়ে বিড়ম্বনার শিকার যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গত মঙ্গলবার সকাল থেকে সমিতির নির্ধারিত ১৫০০ টাকা দিয়ে প্লেট নাম্বার না নেওয়ার কারনে বাড়ইপাড়া- মহরাবহ আঞ্চলিক সড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেন রিকশা সমিতির নেতারা। এ ঘটনার পরেরদিন বুধবার সকালে পেটের দায়ে অটোরিকশা চালকরা তাদের রিকশা নিয়ে রাস্তায় বের হলে সাবেক বিএনপি নেতা রিকশা সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন সিরাজীর নেতৃত্বে রাস্তায় চলাচলরত রিকশাচালকদের মারধর করে রিকশা আটকিয়ে পূনরায় ওই সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেন। পরে অটোরিকশা চালকেরা রাস্তায় রিকশা চালাবে না শর্তে সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে ভুক্তভোগী অটোরিকশা মালিক ও চালকরা গোসাত্রা মোড়ে আটাবহ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক কে. এম ইব্রাহিম খালিদের অফিসে গিয়ে তার কাছে অভিযোগ করেন। এ ছাড়াও কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট মোবাইল ফোনে বিষয়টি অবগত করেন বলেও জানান রিকশা চালকেরা। উল্লেখ্য যে, উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের মহরাবহ হতে আশুলিয়া থানার বাড়ইপাড়া স্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় তিন শতাধিক ব্যটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। হঠাৎ হিজলহাটি ফার্ম বাজার এলাকায় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের অফিসের সাথে কয়েকজন মিলে আটাবহ ইউনিয়ন রিকশা ও ভ্যান মালিক সমবায় সমিতি নামে একটি অফিস খুলেন। পরে ওই সমিতির নেতারা কিছুদিন ধরে তাদের অফিসের সামনে হিজলহাটি ফার্ম এলাকায় সড়কে চলাচলরত রিকশার গতিরোধ করে টাকা আদায় করে আসছে। অটোরিকশা আটক করে ওই সমিতির নেতারা চালকদের কাছে লাইসেন্সের (প্লেট নাম্বার) নামে অটোরিকশা প্রতি ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা আদায় করেছেন। লাইসেন্সের নামে চাহিদা মতো চাঁদার টাকা না দিলে ওই সড়কে অটোরিকশা চালানো বন্ধের হুমকিও দেন সমিতির নেতারা। এর ধারাবাহিকতায় ওই সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন সিরাজীর নেতত্বে তার কয়েকজন সহযোগী জারপূর্বক অটোরিকশা আটকিয়ে ১৫০০/- টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স নিতে বলেন এবং প্রতিদিন ৫০ টাকা করে চাঁদা দাবী করেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে ভুক্তভোগী অটোরিকশা চালকরা বাদী হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী অটোরিকশা চালকরা জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে লাইসেন্স (প্লেট নাম্বার) নিয়ে এতদিন কোন প্রকার চাঁদা ছাড়াই ওই সড়কে বিনা বাঁধায় আমরা অটোরিকশা চালিয়ে আসছিলাম। কি যেন হঠাৎ করেই কিসের একটা সমিতি খুলে লাইসেন্সের নামে এক থেকে দেড় হাজার টাকা দাবী করছে। টাকা না দেয়ায় দুইদিন হলো আমাদের রিকশা চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। আমদের কিস্তি আছে ? তারপর রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আটাবহ ইউনিয়ন রিকশা ও ভ্যান মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন সিরাজীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, লাইসেন্সের নামে অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে কেউ টাকা নিতে পারেন না। যদি এরকম ঘটনা ঘটে তাহলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।