নওগাঁয় এক অসহায় বৃদ্ধের অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ
Spread the love

নওগাঁয় এক অসহায় বৃদ্ধের অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ

 

নওগাঁয় মোঃ রেজাউল ইসলাম(৫০) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ করেছেন মোঃ ফুলবাস(৭০) নামের অসহায় বৃদ্ধ।ভুক্তভোগীর করা অভিযোগ অনুযায়ী অভিযুক্ত রেজাউল ইসলাম জেলার মান্দা উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মোঃ মোবারক হোসেনের ছেলে। বিগত দিনে ভুক্তভোগীর সাথে অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির সুসম্পর্ক থাকায় দফায় দফায় প্রায় ছয় লক্ষাধিক টাকা কর্য্য হিসেবে গ্রহন করেন রেজাউল। তবে সে সম্পর্ক হার মানে অর্থের কাছে, শুরু হয় নানা বিপত্তি। দিন পেরিয়ে বছর, বছরও পেরিয়েছে বেশ কয়েকটা, তবে ফুলবাস ফিরে পায়নি পাওনা টাকা। গ্রাম্য শালিসে একাধিকবার টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনো পালন করেনি রেজাউল।

এবিষয়ে মোঃ ফুলবাস সাগিদারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, অভিযুক্ত রেজাউল ইসলাম সম্পর্কে আমার বিয়াই ছিলেন, আনুমানিক ২০১৭ সালে তার মেয়ের সাথে আমার কনিষ্ঠ পুত্রের বিবাহ হয়। যার সুবাদে তার সাথে আমার সুসম্পর্ক গড়ে উঠে আর সেই সুযোগে আমার নিকট হতে একাধিক বার প্রায় ছয় লক্ষাধিক টাকা নেন। তবে উল্লেখিত অংকের টাকার মধ্যে আমার নিজের কিছু এবং অপর কয়েকজনের কাছ থেকে জামিনদার হয়ে টাকা নিয়ে দিয়েছিলাম। টাকা নেওয়ার সময় তার কাছে বন্ধককৃত প্রায় চারবিঘা জমির কাগজপত্র( ষ্ট্যাম্পে চুক্তি পত্র) আমাকে দেন, এবং আমাদের মাঝে চুক্তি হয় যে উক্ত জমি টাকা ফেরত না দেওয়া অব্দি আমি ভোগদখল করবো। কিন্তু জমির মালিকের কাছ থেকে গোপনে টাকা ফেরত নেওয়ার কারনে আমি সে জমিতে শুধুমাত্র একবার ফসল করতে পেরেছি। আমার কষ্টে উৎপাদিত ফসল ( ৪২ মন ধান) সে বিক্রি করে আমার সাথে বড় ধরনের প্রতারণা করেছে। তবুও সম্পর্কের দিক বিবেচনা করে আমি তার জোরালো প্রতিবাদ করিনি। টাকা নেওয়ার কিছু দিন পর সে বিদেশে চলে যান, এরপর যে টাকা গুলো আমি জামিনদার হয়ে নিয়ে দিয়েছিলাম সেগুলো ফেরত না দেওয়ায় আমাকে জেলও খাটতে হয় যা আমার জীবনের খুবই মর্মান্তিক ঘটনা গুলোর মধ্যে একটি । তবে অপর ব্যক্তিগুলোর টাকা ফেরত দিলেও আমার ব্যক্তিগত প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আজ দিব, কাল দিব বলে তা এখনো ফেরত দিচ্ছে না। এই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে শালিস বসলে সেখানে একাধিক বার প্রতিশ্রুতি দিয়েও আজ-অব্দি তা ফেরত দেয়নি রেজাউল। বর্তমানে সে আমার সাথে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে, এবং আমার পাওনা অর্থ আত্মসাৎ এর পায়তারা করছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করছি।তথ্য নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি স্থানীয় একাধিক মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রলোভনে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে দীর্ঘদিন লাপাত্তা( বিদেশে বসবাস) ছিলেন। বর্তমানে দেশে অবস্থান করলেও বেশিরভাগ সময় থাকেন আত্মগোপনে।এব্যপারে ওই এলাকার বাসিন্দা মোঃ আঃ জব্বারের সাথে কথা হলে অর্থ লেনদেনের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, একাধিক বার আমি এবং স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে বিষয়টি নিরসন করার চেষ্টা করেছি। তবে রেজাউল ইসলাম প্রতিবারই টাকা ফেরত দিব বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু এখনো টাকা ফেরত দেননি বলেই আমি জানি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, রেজাউল ইসলাম ইতিপূর্বে অনেক মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন কায়দায় লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ টাকা ফেরত পাবার আশায় তার কাছে আসেন।স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম মুঠোফোনের মাধ্যমে জানান, রেজাউল ইসলাম এবং ফুলবাস সাগিদারের অর্থ লেনদেনের বিষয়ে একাধিকবার গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে নিরসনের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সেটা নিষ্পত্তি হয়নি।কথপোকথনের শেষ পর্যায়ে সংবাদ প্রকাশে নিষেধ এবং বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য ৭ দিন সময় চান তিনি।স্থানীয় মোঃ নাসিরউদ্দিন নামের একজন গণমাধ্যম কর্মী মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সংবাদ প্রকাশের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসেন টাকা ফেরতের ব্যপারে ভুক্তভোগীকে সহযোগিতা করা হবে।এ বিষয়ে অভিযুক্ত রেজাউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তিনি বাড়িতে না থাকায় এবং তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ থাকার কারনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে রেজাউল ইসলামের মা এর কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন কিছুই জানেন না এবং তাঁর ছেলের ব্যপারে জানতে চাইলে কোন ধরনের তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

সর্বশেষ খবর

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031