শ্যামনগরে শিশু কার্ডের চাউল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান গাজী আনিছুজ্জামান আনিছের বিরুদ্ধে।
আল-হুদা মালী সাতক্ষীরা শ্যামনগর প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের হত দরিদ্রের ভিজিডি কার্ডের ২১৭ জনের শিশুর চাউল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান গাজী আনিছুজ্জামান আনিছের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাশিমাড়ী ইউনিয়ন শাখার ৫নং ওয়ার্ডের সভাপতি মোহর আলী সরদারের ছেলে মোঃ সানাউল্লাহ সরদার সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা সহকারী (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান ঘটনাস্থলে যেয়ে ভিজিএফ এর চাউল জব্দ করেন বলে জানা গেছে।
সানাউল্লাহ সরদার অভিযোগে বলেন, ইউনিয়নে হত দরিদ্রের ভিজিডি শিশু কার্ডের চাউল ২১৭ বস্তা চাউলের মধ্যে ২১৪ জনের মধ্যে দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট ৩ জনের চাউল দেওয়া হয়নি। তিন জনের ৩ বস্তা চাউলের জায়গায় ইউনিয়ন পরিষদের ষ্টোরে আছে ১৭ বস্তা চাউল। এই ১৭ বস্তা চাউলে আত্মসাতের জন্য গত ইং ২ অক্টোবর রাত আনুঃ ১০.০০ ঘটিকার দিকে ভ্যান যোগে সরানোর চেষ্টা করছিল কাশিমাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান । ঐ সময় আমি গোপন সূত্রে জানতে পেরে তৎক্ষনাত এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আসলে আমাদেরকে দেখে তাহারা দ্রুত আবার পরিষদের গোডাউনের ভিতর চাউলগুলো রেখে পালিয়ে যায়। আমি আরও জানতে পারি ভিজিডি সুবিধাভোগীদের ২ মাসের (৩০+৩০) কেজি ৬০ কেজি চাউলে পরিবর্তে ৫৫ কেজি করে চাউল বিতরণ করেন। এবং আমরা সাথে সাথে ৯৯৯ নং সহ শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি কে জানাই। কিন্তু তার পরেও তাহারা কোন ধরনের পদক্ষেপ বা ব্যাবস্থা না নেওয়ায় আমি সাতক্ষীরা জেলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মহোদয় বরাবর অভিযোগ আকারে জানালে তিনি সহকারী কমিশনার (ভুমি) শ্যামনগর কে সাথে সাথে ব্যাবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেন এবং পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিষদে যেয়ে উক্ত ভিজিএফ এর চাউলগুলো জব্দ করা সহ তিন সদস্যের একটি কমিটি করে দেন । ছানাউল্লাহ সরদার আরও জানান একজন ইউপি চেয়ারম্যান যদি ১৭ বস্তা চাউলের লোভ সামলাতে না পারে তাহলে এলাকার বাকি মানুষগুলো কি করবে। এই ইউপি চেয়ারম্যান আনিছুজ্জামানের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এ ধরনের বহু অপকর্ম,অনিয়ম, দুর্ণীতির রেকর্ড রয়েছে।এহেন জঘন্যতম কাজের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরী বলে আমি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মহোফয়ের নিকট দাবী জানাচ্ছি।
সহকারী কমিশনার ভুমি শ্যামনগর ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান জানান, কাশিমাড়ি ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিএফ এর চাউল আত্মসাৎ এর অভিযোগের ভিত্তিতে সাথে সাথে কাশিমাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে যাই।সেখেনে যেয়ে ঘটনার সত্যতা সহ আমরা ১৭ বস্তা চাউল পরিষদের গোডাউনের মধ্যে দেখতে পাই এবং তাৎক্ষণিকভাবে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি কমিটি তদন্ত করে জানালে পরবর্তীতে ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গাজী আনিছুজ্জামান আনিস বলেন আমি চাউল বিতরণ সঠিকভাবে করেছি আমার ১৪ জন লোকের চাউল দিতে বাকি রেখেছিলাম তাদের বৃষ্টির কারণে দেয়া হয়নি বৃষ্টি কমলেই দিয়ে দেবো বলে পরিষদের গোডাউনে রেখেছিলাম।
কাশিমাড়ি ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্জ এস এম আব্দুর রউফ জানান বিগত দিনে আমি চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময় এই ইউনিয়নে শিশু কার্ড ও হতদরিদ্রদের ভিজিএফ এর চাউল নিজে দায়িত্বে বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি আর আজ বতর্মান চেয়ারম্যান আনিস সেই হতদরিদ্রদের ভিজিএফ কাডের চাউল আত্নসাৎ করছে এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা এলাকাবাসির পক্ষ থেকে মাননীয় জেলা প্রশাসকের নিকট উক্ত ঘটনার তদন্তের মাধ্যমে ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।