বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের শুভ মধু পুর্ণিমা উদযাপন
উবাসি মারমা রুমা প্রতিনিধি
মধু পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি ধর্মীয় তিথি ও একটি পুণ্যময় দিন এবং ঐতিহাসিক ধর্মীয় উৎসব। অন্যান্য পূর্ণিমার মতো ‘মধু পূর্ণিমা’ তিথিও বৌদ্ধরা অত্যন্ত শ্রদ্ধাভরে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে পালন করেন।
এই পূর্ণিমা তিথিতে তথাগত গৌতম বুদ্ধ গহীন জঙ্গলে ও পারলিয়্য বনে অবস্থানকালে বুদ্ধকে এক বানর মধু দান করেছিলেন এবং সেই দানের কর্মের ফলে মৃত্যুর পর বানরটি দেবলোকে জন্মগ্রহণ করে।
তথাগত ভগবান বুদ্ধ পারলিয়্য বনে নির্জনে বসবাসকালে বহু প্রাণীর সঙ্গে বুদ্ধের নিবিড় মৈত্রীভাব গড়ে ওঠে। বুদ্ধের মৈত্রীময় জীবনাচার বন্য প্রাণীদের আকৃষ্ট করে। বনের সকল প্রাণীও বুদ্ধকে সেবা করতে এগিয়ে আসে। সে সময় এক বন্য হাতি বুদ্ধকে নানা রকম ফলমূল দিয়ে সেবা করতে থাকে। এসব দেখে এক বানরের মনেও তথাগত বুদ্ধকে সেবার ইচ্ছা জাগে। সেদিন ছিল ভাদ্র পূর্ণিমা। বানরটি এক মধুচাক সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান দিলেন বুদ্ধ সন্তুষ্ট চিত্তে সেই দান গ্রহণ করলেন। বুদ্ধ মধু চাকটি গ্রহণ করায় বানরটি অত্যন্ত উৎফুল্ল হয়। দান ও ত্যাগের মাধ্যমে যে পারস্পরিক প্রীতিময় সম্পর্ক গড়ে ওঠে এটি একটি বন্য প্রাণীও উপলব্ধি করতে সামর্থ হয়। পরে এই বানর ত্যাগ মহিমায় উৎফুল্ল চিত্তে মৃত্যুবরণ করে দেবলোকে উৎপন্ন হয়।
সেই পুণ্যময় ঘটনার কারণে ভাদ্র পূর্ণিমা তিথিকে মধু পূর্ণিমা নামে অভিহিত করা হয়। সেই থেকে ভাদ্র পুর্ণিমাকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মহাসমারোহে পালন করে থাকেন।
এই উপলক্ষে আজ শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় বান্দরবান জেলা রুমা উপজেলা চীবোয়াদাক পাড়া বৌদ্ধ বিহারে, বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা পঞ্চশীল ও অষ্টমশীল প্রার্থনার মাধ্যমে বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার, কল্পতরু দান, পিন্ডদান, বুদ্ধপূজা ও নানাবিধ দান করা হয়।
মধু পুর্ণিমা উপলক্ষে জগতের সকল প্রাণী হিতসুখ ও মঙ্গলানার্থে দেশবাসীর প্রতি সুখ শান্তি কামনা করা হয়।