কালিয়াকৈরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ-ঝুঁকিপূর্ণ,পুরাতন-ভাঙ্গাচুরাভবনে শিক্ষার্থিদের পাঠদান, আতংকে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ২২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। শুধু কোমলমতি শিশুরাই নয়, বড় ধরণের দুর্ঘটনার আতঙ্কে আছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরাও। তবে অতিদ্রুত জরাজীর্ণ-ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের মাধ্যমে শঙ্কামুক্ত সুন্দর শিক্ষা পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবী স্থানীয়দের।
এলাকাবাসী, অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের মতো কালিয়াকৈর উপজেলাতেও ব্যাপক উন্নয়ন করেছে বর্তমান সরকার। এর ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আলহাজ¦ এ্যাড. আ. ক. ম মোজাম্মেল হকের হস্তক্ষেপে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় নতুন নতুন ভবনসহ সুন্দর শিক্ষা পরিবেশ সৃষ্টি করেছে উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অফিস। অথচ এ উপজেলার ১২২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এখনো ২২টি স্কুলের মধ্যে পুরাতন, জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূণ-১৪টি, অতি-ঝুঁকিপূর্ণ ৮টি। এগুলো হচ্ছে, কালিয়াকৈর, নয়াপাড়া, কাচিঘাটা, ডাইনকিনি, গলাচিপা, বহেরাতলী, উত্তর দাড়িয়াপুর, বাঁশতলী, সিনাবহ, আকুলিচালা, তালতলী, মুরাদপুর, হাটুরিয়াচালা, মাঝুখান, রাজাবাড়ী, পাইকপাড়া, সাহেবাবাদ, অলিয়ারচালা, কাঞ্চনপুর, সেওড়াতলী বালক, কাইনারা, ভান্নারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব স্কুলের ভবনে পিলার ও ছাদের পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। অনেক সময় কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ওপর পলেস্তারার বিভিন্ন অংশ খসে পড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন শ্রেনীকক্ষের দেওয়ালেও রয়েছে ছোট-বড় ফাটল। এসব কারনে বই-পুস্তক, কলম-খাতা ও স্কুলব্যাগও নষ্ট হচ্ছে। নোংরা হচ্ছে শ্রেনীকক্ষের শিক্ষা পরিবেশও। সব মিলিয়ে জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এসব স্কুলের ভবন গুলো। আর এসব জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলের ভবনেই আতঙ্কের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের চলছে পাঠদান। এ কারণে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রমও। এছাড়াও পাঠদানের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় স্কুলে পাঠিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন অভিভাবকরা। এসব জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা। ফলে শুধু কোমলমতি শিশুরাই নয়, বড় ধরণের দুর্ঘটনার আতঙ্কে আছেন শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়রাও।
কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী তাসলিমা, অনিক সাহা, অর্জুন সরকার, সামিয়া আক্তারসহ অনেকেই বলেন, অনেক সময় আমাদের ওপর ছাদ থেকে বালু, পাথর, সিমেন্ট খসে পড়ে। স্কুলের ভবন খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এজন্য আমরাও খুব আতঙ্কে থাকি। সরকার যদি তাড়াতাড়ি মেরামত করে দিতেন, তাহলে আমাদের লেখাপড়া আরো ভাল হতো। শুধু শিশু শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরাই নয়, অতিদ্রুত জরাজীর্ণ-ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণের মাধ্যমে শঙ্কামুক্ত সুন্দর শিক্ষা পরিবেশের দাবী জানিয়েছেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহেদা আখতার জানান, অতিরিক্ত ভবনের জন্য মাননীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আলহাজ¦ এ্যাড. আ. ক. ম মোজাম্মেল হক স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। স্যারও এটার জন্য ডিউ লেটার প্রদান করেছেন। তবে খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান করা হবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ জানান, ইতিমধ্যেই স্কুলের জরাজীর্ণ-ঝুঁকিপূর্ণ ভবন গুলোর তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে সেগুলো অনুমোদন হলেই অতিদ্রুত বিধি মোতাবেক টেন্ডারের মাধ্যমে কাজগুলো সমাধান করা হবে।