সিরাজগঞ্জে কবি তাহমিনা হোসেন কলি’র প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যমুনা পাড়ের মেয়ে’র প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত
মোঃ আশিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের উদীয়মান কবি, আবৃত্তিকার, উপস্থাপিকা ও কবি তাহমিনা কলির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যমুনা পাড়ের মেয়ে’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জের প্রতিধ্বনি আবৃত্তি কেন্দ্র আয়োজনে- বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর -২০২৩) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে শহীদ এম. মনসুর আলী অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘যমুনা পাড়ের মেয়ে’ বইটির মধ্যে কবির ভালোবাসা, উপলব্ধি এবং অনুভবের বর্ণিল প্রকাশ দেখতে পাওয়া যায়। আমরা কবি ও সাহিত্যিকদের দেখেছি তারা অমর হয়েছেন তাঁদের সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে। কবিতার যে শক্তি সেই শক্তি দিয়েই কবিরা খুব সহজেই মানুষের মনকে দখল করে ফেলতে পারেন। সময় ও সমাজের সত্যকে ধারণ করেই কবিতা অনাগত কালের অভিসারী। স্বদেশের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে কবির পরিচয়। কবি মাত্রই সংবেদনশীল মানুষ, তাই তাঁদের দেশপ্রেমানুভূতি সাধারণ মানুষের চাইতে প্রখর হয় স্বাভাবিকভাবেই।
উপাচার্য মহোদয় কবি তাহমিনা কলি’র বিভিন্ন কবিতার চরণ উল্লেখ করে তার স্বদেশ ভাবনা, ভাষা শহীদ, মুক্তিযোদ্ধা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা, সমাজ সচেতনতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা, প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্ক, বিরহ বিচ্ছেদ নিয়ে লেখা কবিতায় উপস্থাপিত কবির উপলব্ধির ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন। উপাচার্য আরো বলেন, ভালোবাসাবিহীন পৃথিবী ঊষর মরুর মতো, তাই কবিরা চিরকাল প্রেমের পূজারী, কারণ তারা সৌন্দর্যকে চায় কল্যাণকে চায় সত্যকে চায়। কবিতা, সাহিত্য ও শিল্প চিরকাল সত্য সুন্দর কল্যাণকে তার সঙ্গী করেছে, এই পৃথিবী ততোদিন মানুষের যতোদিন মানুষ সত্য সুন্দর কল্যাণকে ভালোবাসবে, ভালোবাসবে।
সিরাজগঞ্জ প্রতিধ্বনি আবৃত্তি কেন্দ্রের উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদ উদ্দিন পবলু’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে
মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন করেন, উদ্বোধক বয়োবৃদ্ধ বিশিষ্ট নাট্যকর আনু ইসলাম
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি কবি আব্দুল বারী শেখ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিরাজগঞ্জের সভাপতি ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মমিন বাবু,
সিরাজগঞ্জ নজরুল একাডেমী’র সভাপতি সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক মোঃ হেলাল আহমেদ, উল্লাপাড়া পৌরসভা পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম, প্রতিধ্বনি আবৃত্তি কেন্দ্রের উপদেষ্টা এস.এম.সাইদুল ইসলাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিরাজগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক ইমরান মুরাদ, বিশিষ্ট চিকিৎসক ও কবি ডাঃ নিত্য রঞ্জন পাল, নাবিক নাট্যগোষ্ঠির সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল,রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী, শিক্ষক নূরে আলম হীরা প্রমুখ । অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন, আবৃত্তিকার এ,কে আজাদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, প্রকাশনা উৎসব উদযাপন কমিটি প্রতিধ্বনি আবৃত্তিকেন্দ্র সিরাজগঞ্জের আহবায়ক ফরিদুল ইসলাম সোহাগ।
উক্ত অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন, কবি তাহমিনা কলি’র শিশুপুত্র নুরনবী ইসলাম কাব্য সহ অন্যন্যারা অনুষ্ঠানের পরিশেষে মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকমন্ডলী, শিক্ষার্থীবৃন্দ, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিকবিদ, নাট্যকর, সুধীজন, গুণীজন সহ হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
তাহমিনা হোসেন কলি’র প্রথম কাব্যগ্রন্থ “যমুনা পাড়ের মেয়ে” কাব্য গ্রন্থে কবিতায় লেখা উঠে এসেছে -নদীর এপার ভাঙে ওপার গড়ে-এইতো নদীর খেলা। যমুনা পাড়ের মানুষের জীবন সংগ্রামের কথা রয়েছে। যমুনা পাড়ের মানুষেরা প্রতিনিয়ত নদীর সাথে যুদ্ধ করে। বেঁচে থাকার তাগিদে ভিটেমাটি, ঘর-বাড়ী তৈরি করে, কিন্তু কিছু দিন পর নদীর ভাঙ্গনে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। রাত শেষে যেমন প্রতিদিন নতুন সূর্য ওঠে তেমনি নতুন দিনের অপেক্ষায় নতুন চর জেগে উঠলে তারা আবার স্বপ্নের বীজ বোনে। আজীবন নদীর সাথে সংগ্রাম করেই তারা বেঁচে থাকে। কিন্তু কবির মনে নেই হতাশা।
কবি তাহমিনা হোসেন কলির পিতার নাম- মরহুম ছোহরাব হোসেন, সাং- খলিশাকুড়া, খোকশাবাড়ি, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা, জেলা – সিরাজগঞ্জ। কবি তাহমিনা হোসেন কলি’র স্বামীর নাম ফরিদুল ইসলাম সোহাগ, তাদের ২ জন শিশু পুত্র রয়েছে। তারা সিরাজগঞ্জ শহরে বসবাস করছেন।