অরক্ষিত পল্লী বিদ্যুৎ এর তারে পিকনিকের ইঞ্জিন চালিত লোহার নৌকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে এক কলেজ শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু।
গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈরের ঐতিহ্যবাহি মকশ বিলে বড় বোনের সাথে ঘুরতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলো কলেজ ছাত্র সিয়াম(২০)।
পানিতে ডুবে যাওয়ার ১৭ ঘন্টা পর লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল।
নিহত সিয়াম উপজেলার মাঝুখান গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে। সে মৌচাক স্কাউট স্কুল এ্যন্ড কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
নিহতের পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার মাঝুখান মর্নিংসান স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা মিলে ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে পার্শবর্তি মকস বিলে ভ্রমণে আসে।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা লিজা আক্তার তার ছোট ভাই সিয়ামকে তাদের সাথে বেড়াতে নিয়ে আসে। মকস বিল ভ্রমণ শেষে তারা ফেরার পথে সন্ধ্যা নেমে আসে।
এসময় অন্ধকারে তালতলী এলাকায় আনন্দ পার্কের পিছনে নৌকা পৌছলে বিলের ওপর দিয়ে টাঙ্গানো উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক তার(ক্যাবল) র্স্পশ করে এবং নৌকাটি বিদ্যুতায়িত হয়ে আগুন ধরে যায়। এসময় তারা নৌকা থেকে লাফিয়ে বিলের পানিতে ঝাঁপ দেয়। অনেকে সাতরিয়ে জীবন রক্ষা করেন। তাদের চিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ নৌকা নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে অনেককেই আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে পারলেও সিয়ামের কোন সন্ধান তারা পাচ্ছিলেন না।
শুক্রবার সকাল থেকেই কালিয়াকৈর ফায়ার স্টেশন অফিসার রায়হানের নেতৃত্বে ডুবুরীরা উদ্বার অভিযান শুরু করেন। দীর্ঘ ৬ ঘন্টার অভিযানের পর দুপুর ১২ টায় নিখোজ সিয়ামের লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবত পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে এসব অরক্ষিত বিদ্যুতের লাইনের বিষয়ে অভিযোগ জানানোর পরও ঝুলন্ত তার গুলো উপরে উঠানো হয়নি। তাদের দাবী দ্রুত যেন এই বিদ্যুতের তারগুলো অপসারন করা হয়।
সিয়ামের বোন লিছা আক্তার জানান, আমি সাঁতার জানতাম না তবুও প্রাণ বাচাতে বিলের পানিতে ঝাপ দেই। পানিতে পরে গিয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে সুমন নামের স্থানীয় এক যুবক আমাকে উদ্বার করেন।
কালিয়াকৈর থানার উপ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান পিপিএম জানান, ফায়ার সার্ভিসের সহযোগীতায় লাশ উদ্ধার হয়েছে এবং পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে লাশ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।