আলমডাঙ্গা ফরিদপুরে তাফসির মাহফিলে মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা — আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে মুফতি আমীর হামজা
Spread the love

চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত ৪১তম তিন দিনব্যাপী তাফসীরুল কুরআন মাহফিল ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক আলোচনার।
তাফসির মাহফিলের তৃতীয় তথা শেষ দিনে (৪ নভেম্বর ২০২৫, সোমবার) প্রধান তাফসিরকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, তাফসিরকারক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী মুফতি আমীর হামজা।

তিন দিনব্যাপী এই মাহফিলে প্রতিদিন দেশের খ্যাতনামা আলেমরা বক্তব্য রাখেন।
২ নভেম্বর প্রধান তাফসিরকার ছিলেন মাওলানা হাসান আল মামুন লাল (কুষ্টিয়া) এবং বিশেষ আলোচক ছিলেন ক্বারী আবুল বাশার ও রাজন আলী ইমাম।
৩ নভেম্বর তাফসির করেন মুফতি নুরুজ্জামান সাইফী (ঢাকা), বিশেষ আলোচক ছিলেন আলমডাঙ্গার মুফতি গোলাম মুক্তাদির ও মাওলানা ওসমান গণি।
শেষ দিন ৪ নভেম্বর সূরা তওবা ১১১ নং আয়াতের তাফসির পেশ করার কথা ছিল মুফতি আমীর হামজার।

তবে শেষ দিনের মাহফিল ঘিরে দেখা দেয় উত্তেজনা। রাত ৯টার দিকে মাহফিল মঞ্চে মিডিয়া কর্মীরা উপস্থিত হলে মাহফিল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়— কেউ মোবাইল বা ক্যামেরায় ভিডিও করতে বা লাইভ সম্প্রচার করতে পারবে না।
ফলে সাংবাদিক ও স্থানীয় মিডিয়া প্রতিনিধিরা বাধ্য হয়ে স্থান ত্যাগ করেন।

এই ঘটনায় স্থানীয় মিডিয়া কর্মী ও সাংবাদিক সমাজে তীব্র ক্ষোভ ও প্রশ্নের জন্ম হয়েছে— কেন ধর্মীয় মাহফিলে মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা?

মাহফিল আয়োজকদের পক্ষ থেকে কোনো পরিষ্কার জবাব পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় সূত্র ও সামাজিক মহলে জোর গুঞ্জন উঠেছে, রাজনৈতিক প্রভাব বা নির্বাচনী বক্তব্যের আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

তথ্য অনুসারে, মুফতি আমীর হামজা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী থেকে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হন ২০২৫ সালের ২৫ মে অনুষ্ঠিত জেলা জামায়াতের এক সমাবেশে।
তবে তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় কোনো পদে নেই বলে জানা গেছে। কিছু সংবাদসূত্রে উল্লেখ আছে যে, তিনি জামায়াতের ওলামা বিভাগে সক্রিয়ভাবে কাজ করেন, কিন্তু দলের শুরা সদস্য বা উচ্চপদে আছেন— এমন তথ্য নিশ্চিতভাবে পাওয়া যায়নি।

ধর্মীয় অঙ্গনে তাফসিরকার ও বক্তা হিসেবে আমির হামজা বেশ পরিচিত। তার আলোচনায় ইসলামিক ভাবধারা ও সামাজিক মূল্যবোধের উপর জোর থাকে বলে তার অনুসারীরা দাবি করেন।

এলাকার রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে এই ঘটনাকে ঘিরে তীব্র আলোচনা চলছে।
একজন স্থানীয় সমাজকর্মী বলেন, “ধর্মীয় মাহফিলে মিডিয়া নিষিদ্ধ করা মানে প্রশ্ন জাগানো— কী গোপন করতে চান?”
অন্যদিকে কিছু ইসলামপ্রিয় মানুষ মনে করছেন, “মিডিয়া উপস্থিত থাকলে মাহফিলের পবিত্র পরিবেশ ব্যাহত হয়, তাই কর্তৃপক্ষ সতর্ক হয়েছে।” যে কারণেই হোক, আলমডাঙ্গা ফরিদপুরের এই মাহফিল এখন আলোচনার কেন্দ্রে — ধর্মীয় মাহফিলের আড়ালে কি রাজনীতির ছায়া পড়ছে?

সর্বশেষ খবর

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930