মুসলিম উম্মাহর অন্যতম অভিভাবক শহীদ প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসির ৬ষ্ঠ শাহাদাতবার্ষিকী আজ
Spread the love

মিশরের ৫ম রাষ্ট্রপতি মুহাম্মদ মুরসি ছিলেন মিশর, ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, সিরিয়াসহ পৃথিবীর নির্যাতিত মুসলিমদের জন্য আশার আলো মুসলিম ব্রাদারহুড নেতা হাফেজে কুরআন শহীদ মুহাম্মদ মুরসি।
মূসা (আ), ইউসূফ (আ) সহ অসংখ্য নবী-রাসূলদের স্মৃতি বিজড়িত মিশরের পবিত্র ভূ-খন্ডের প্রথম ও একমাত্র নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে ২০১৩ সালের ৩রা জুলাই এক সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।

অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন তৎকালীন সেনা প্রধান আবেল ফাত্তাহ আল সিসি। মুহাম্মদ মুরসিকে বিচারের নামে কারাবন্দি রেখে একের পর এক সাজা দেওয়া হয়। গণহত্যা চালিয়ে হাজারো ইখওয়ান সমর্থককে হত্যা করা হয় এবং সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী ঘোষণা করা হয়।

উম্মাহর প্রতি দায়িত্বশীল ও দরদী এই ইখওয়ান নেতা গাজায় দখলদার ইসরাইলের অবরোধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এবং হামাসের নেতৃত্বকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছিলেন। মিশর-ইসরাইল সীমান্ত খুলে দিয়ে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ সুগম করেছেন। সিরিয়া, মিয়ানমারসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলিমদের পক্ষে তাঁর কণ্ঠ সর্বদাই সোচ্চার ছিল। সংসদ সদস্য হিসেবেও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

ছাত্রজীবন থেকেই ইসলামী আন্দোলনে সক্রিয় এই কিংবদন্তী নেতা মিশরে ইসলামী শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরণ লড়াই করেছেন। মুহাম্মদ মুরসি কুরআনের আলোকে সংবিধান প্রণয়নের ঘোষণা দেওয়ায় সেক্যুলাররা তীব্র আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনকে পুঁজি করে জেনারেল আল সিসি ক্যু করে ক্ষমতা দখল করে নেয়। ২০১৯ সালের ১৭ জুন বিনা চিকিৎসায় কারাগারেই শহীদ হন মুহাম্মদ মুরসি। তাঁর শাহাদাত মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি গভীর বেদনাবিধুর অধ্যায়। তিনি ছিলেন ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও ন্যায়বিচারের এক বলিষ্ঠ প্রতীক।

মুরসি ২০০০ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং ২০০৫ সাল পর্যন্ত মিশরের সংসদে বহাল ছিলেন। এ সময়ে তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। ২০১১ সালে মুসলিম ব্রাদারহুড ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি (এফজেপি) নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলে মুরসী তার চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। মিশরের দুই পর্বের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, যেটি ২০১২ সালের মে ও জুনে অনুষ্ঠিত হয়, সে নির্বাচনে মুরসী এফজেপির মনোনীত প্রার্থী ছিলেন এবং উভয় পর্বেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

২৪ জুন, ২০১২ তারিখে মিশরের নির্বাচন কমিশন মুহাম্মাদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপতি হোসনি মুবারাকের সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী আহমেদ শফিকের বিপরীতে দ্বিতীয় পর্বের ভোটে, যেটি প্রথম পর্বের শীর্ষ দুই প্রার্থীর মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, জয়ী ঘোষণা করে। কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী মুরসী ৫১.৭ শতাংশ এবং আহমেদ শফিক ৪৮.৩ শতাংশ ভোট লাভ করেন।

নির্বাচন কমিশন এই ফলাফল ঘোষণা করার পর মুহুর্তেই মুসলিম ব্রাদারহুড ও এফজেপি আনুষ্ঠানিক ভাবে মুহাম্মাদ মুরসিকে তাদের সকল সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেয় এবং তাকে ‘মিশরের সর্বস্তরের মানুষের রাষ্ট্রপতি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

সর্বশেষ খবর

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031