
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের মাজু খালপাড়া গ্রামে কুমার নদী দখলের জঘন্য অভিযোগ উঠেছে একটি প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে। রাতের অন্ধকারে ডিজার মেশিন দিয়ে নদীর বুক চিরে তৈরি করা হচ্ছে পুকুর—যা শুধু অবৈধই নয়, ভয়ংকর পরিবেশ ও জনজীবন ধ্বংসকারী।
এলাকাবাসী বলছেন, এই নদীই ছিল কৃষি ও জীবিকানির্ভর জেলেদের একমাত্র ভরসা। এখন সেই নদী ধ্বংসের মুখে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি মোঃ মিলন, মোঃ কোদা বকসু, আব্দুল গফুর, আব্দুল ওয়াহেদ ও আহাম্মদ আলী – অভিযোগ রয়েছে, এরা সবাই নদীর বিভিন্ন অংশ দখল করে মাছ চাষের উদ্দেশ্যে পুকুর খনন করছেন।
এক স্থানীয় বৃদ্ধ কাঁপা কণ্ঠে বলেন, “নদীটা আমাদের শ্বাস, আমাদের জীবন। এখন শুধু পুকুর আর কাদা—কোথাও নদীর প্রবাহ নেই। কথা বললেই হুমকি।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, কোনো ধরনের অনুমোদন দেওয়া হয়নি এবং সরকারি নদী দখল সম্পূর্ণ বেআইনি। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মচারীই এসব ভূমিদস্যুদের উৎসাহ দিচ্ছেন। গোপন সূত্রে জানা গেছে, রাতের বেলা ও ছুটির দিনে মাটি কাটার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছেন এমন কিছু কর্মকর্তা—ঘুষের বিনিময়ে।
এক ভুক্তভোগী বলেন, “আমাদের ঘাটটাও এখন আর ব্যবহার করা যায় না। মনে হয় নদীর নামে এখন শুধু পুকুর বেঁচে আছে।”
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন—কত টাকা হলে নদী বিক্রি হয়? আর কত নদী হারালে প্রশাসনের ঘুম ভাঙবে?
এখনই প্রয়োজন কঠোর আইনি পদক্ষেপ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। নয়তো এভাবে চলতে থাকলে নদী শুধু মানচিত্রে থাকবে, বাস্তবে নয়।
এই কুমার নদী শুধু পানি সরবরাহের উৎস নয়—এটি একটি জীবন্ত ঐতিহ্য, একটি জনপদের প্রাণ।
প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ, দখলদারদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনুন এবং প্রমাণ করুন—নদীর চেয়ে প্রভাবশালী কেউ নয়।