নওগাঁর মহাদেবপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে সরকারি খাস জমিতে লাগানো প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা মূল্যের বট, পাইকর, আম প্রভৃতি জাতের পুরাতন ২০টি গাছ কেটে নিয়ে যাবার অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযুক্তরা বলছেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের একটি ধামের উন্নয়নের জন্য ওই গাছগুলো কেটে বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন এজন্য কোন পূর্বানুমতি নেয়া হয়নি। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে এব্যাপারে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগে উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের সাগরইল গ্রামের মৃত আকবর আলীর ছেলে মতিউর রহমান ও রুহুল আমিনের ছেলে শরিফুল ইসলাম উল্লেখ করেন যে, সাগরইল মৌজার ১ নং খাস খতিয়ানের ২৮২ নং দাগে মোট এক একর ১৪ শতক জমির মধ্যে এক একর জমি তাদের মৌরশের নামে সরকার ১৯৬৯ সালে চিরস্থায়ী পত্তন দেয়। সেই থেকে গত ৫৫ বছর ধরে তারা সে জমি ভোগ দখল করে আসছেন। ওই জমিতে তাদের লাগানো অনেক পুরাতন বট, পাইকর, আম প্রভৃতি গাছ রয়েছে। গত ১০ এপ্রিল সকালে প্রকাশ্য দিবালোকে হাতুড় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিমান চন্দ্র বর্ম্মণের ছোট ভাই গাহলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক দুলাল চন্দ্র বর্মণের নেতৃত্বে¡ সাগরইল গ্রামের জগেন্দী পাহানের ছেলে জবানু পাহান, চরণ পাহানের ছেলে বিমল পাহান, এঙ্গা মাড্ডির ছেলে ঘুটরু মাড্ডি, সুশিল পাহানের ছেলে প্রশান্ত পাহান, পোরশা উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের সাদিক মাড্ডির দুই ছেলে নগেন মাড্ডি ও বিশ^নাথ মাড্ডি এবং সাগর টিক্কার ছেলে সুনিল টিক্কা ওই জমিতে লাগানো ২০টি গাছ কেটে লুট করে নিয়ে যায়।
জানতে চাইলে মোবাইলফোনে অভিযুক্ত দুলাল চন্দ্র বর্ম্মণ গাছ কাটার কথা স্বীকার করে জানান, সরকারি ১৪ শতক জমিতে আদিবাসীদের একটি ধাম তৈরি করা হচ্ছে। এজন্য দুই লক্ষ টাকা সরকারি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেই বরাদ্দের সাথে এই গাছগুলো কেটে বিক্রি করে পাওয়া ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে ওই ধামের উন্নয়ন করা হবে। কিন্তু এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অথবা পত্তন গ্রহিতাদের কাছ থেকে কোন অনুমতি নেননি বলেও জানান। তবে অভিযোগকারীদের দেয়া চিরস্থায়ী পত্তন বাতিলের চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ওই শিক্ষক তার ভাইয়ের দলীয় প্রভাব কাজে লাগিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লুটপাট চালাচ্ছেন তিনি।
জানতে চাইলে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রিফাত আরা জানান, গাছ কাটার বিষয়ে কোন অনুমতি দেয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।