মিন্নীর তৈরি আইল্যাশ রপ্তানি হচ্ছে চীন সহ মধ্য প্রাচ্যের দেশে
Spread the love

এক সময়ে নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের টিএইচটি – স্পেস ইলেকট্রিক্যাল নামের একটি কারখানায় লেবার হিসেবে কাজ করা নীলফামারীর সৈয়দপুরের মেয়ে মিন্নী আক্তার মিথুন ।

সে সময় কারখানাটিতে টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত থাকা চীনের গুয়ানডং শহরের চিশুয়ী টাউনের লীন ঝানরুই এর সাথে পরিচয় হয় ২০২২সালে সৈয়দপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এক সহকর্মীর বিয়ের অনুষ্ঠানে নীলফামারীর সৈয়দপুরের মেয়ে মিন্নী আক্তার মিথুনের সাথে। পরে সেই পরিচয় থেকে ধীরে ধীরে গড়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক। এর পর দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের পরে নবদম্পতি চাকরি ছেড়ে দিয়ে গড়ে তোলেন নকল পাপড়ি তৈরির কারখানা।কারখানা টি প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মিন্নী আক্তার মিথুনের বাবা এবং কারখানা টির চেয়ারম্যান একেএম মোস্তাফিজুর রহমান।কারখানা টিতে কর্মরত থাকা শ্রমিকেরা বলেন মিন্নী আপার কারখানা টিতে কাজ করে নিজের পায়ে দাড়াতে পারছি, পাশাপাশি আমাদের সংসারের সচ্ছলতা ও ফেরাতে পারছি। কারখানা টিতে কাজ করা চাদনী বেগম নামে এক শ্রমিক বলেন সংসারে অভাব দুর করার জন্য বাচ্চাকে বাসা রেখে কাজ করতে এসেছি এবং আল্লাহর অশেষকৃপায় কাজ খুব দ্রুত শিখেছি, ইনশাআল্লাহ কাজ ভালো ভাবে করতে পারবো ।তিনি আরো বলেন আমার স্বামী একজন রিক্সা চালক আমাদের সংসারে তিন টা বাচ্চা আছে, আর আগে সংসারে অনেক অভাব অনটন ছিলো এখানে কাজ করতে এসে সংসারের কিছু টা অভাব অনটন দূর করতে সক্ষম হয়েছি। নাম না বলার শর্তে আরো একজন নারী শ্রমিক বলেন আমি আগে বাসায় বেকার বসে ছিলাম পরে এই আইল্যাশ তৈরির কারখানা কাজ শুরু করি প্রথমে আমি কোন কাজ জানতাম না ২/ ৩ দিনের মধ্যে আমি কাজ শিখে ফেলি আর এখানে আসার আমার ১ মাস হয়ে গেলো এখন মোটামুটি অনেক কাজ শিখছি আশা করি আরো দ্রুত সময়ে সব কাজ শিখতে পারবো। ময়না রানী নামে আরো এক শ্রমিক বলেন এখানে কাজ করে খুব ভালো আছি ভালো বেতন পাচ্ছি , এবং এখানে কাজ করে পরিবারে আমাদের সচ্ছলতা ফিরে এসেছে । আগে কাজের মধ্যে একটু ভুল ভ্রান্তি ছিলো এখন আর কোন ভুল ভ্রান্তি হয় না কারন মিন্নী আপা আমাদের অনেক সাহায্য করে । মিন্নী ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর ম্যানেজার মিন্নী আক্তার মিথুন বলেন আমরা চাচ্ছি আইল্যাশ তৈরির মাধ্যমে আমাদের সৈয়দপুরের বেকারত্ব কমিয়ে আনার। সে জন্য ছোট পরিসরে কোম্পানি টি চালু করি। এবং ৩৫ জন শ্রমিক নিয়ে এটা চালু করি । আমরা চাই এই ক্ষুদ্র পরিসর টা যেন আগামীতে বৃহৎ আকারে ধারন করে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কারিগর গড়ে তুলবো। এবং এই মাসে আমাদের ৬ হাজার পিস প্রোডাকশন হয়েছে যা নতুন অবস্থায় কিন্তু কোন অংশে কম না , তাই আমরা আশা করি আগামী মাসে ৫০ হাজার পিস উৎপাদন করতে সক্ষম হব । আমাদের প্রোডাক্টস গুলো সরাসরি চীনে যায় সেখান থেকে এগুলো আরো প্রস্তুত হয়ে বিভিন্ন দেশে যায়। কারখানা টির উপদেষ্টা চীনা নাগরিক লীন ঝাবরুই বলেন আমরা আপাতত সৈয়দপুর শহরের ওয়াপদা মোড়ের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এর নিচ তলা ভাড়া নিয়ে কারখানা টি চালু করেছি। আমরা সেখানে মহিলাদের চোখের নকল পাপড়ি ( আইল্যাশ) তৈরি করি। আমাদের এই আইল্যাশের সব কাচামাল চীন থেকে আসেন। আমরা সবে মাত্র কারখানা টির কাজ শুরু করেছি কিছু জনবল নিয়ে তাদের কে শেখাচ্ছি। এখান থেকে যে ফিনিশ প্রোডাক্টটা বের হচ্ছে সেটা সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়নি , আংশিক প্রস্তুত হওয়া প্রোডাক্ট গুলোই চীনে পাঠানো হচ্ছে। আমাদের আগামীতে পরিকল্পনাতে রয়েছে এখানে ৩ শত থেকে ৪শত শ্রমিক নিয়ে কাজ করার। এদিকে কারখানা টির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা একেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন কোম্পানির চালু করার সবে মাত্র ২ মাস হলো এখানে ২০০ জন বেকার ছেলে মেয়ে নিয়ে কাজ করানোর টার্গেট ছিলো। কারণ কাজ টা যেহেতু শিল্পকর্মের মতো সেক্ষেত্রে কাজটা বুঝে শুনে করতে হবে । সেকারনে সবাই কাজ টা চট করে করতে পারে না। শেখানোর পর কাজ করানো হচ্ছে । তারপর ও এখানে ৫০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছে।

সর্বশেষ খবর

Sat Sun Mon Tue Wed Thu Fri
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930