নওগাঁর মান্দায় পশ্চিম নুরুল্যাবাদ গ্রামের মৃত শুকুর আলীর পারিবারিক জমি জোতবাজার ব্রিজের জায়গা অধিগ্রহনের টাকা প্রাপ্তি থেকে প্রশাসন বঞ্চিত করার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্ত ভোগী পরিবার।
আজ সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টার সময় তার নিজ বসত বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।সংবাদ সম্মেলনে শুকুর আলীর মেয়ে মরিয়ম বেগম জানান, আমার পিতার বাড়ি ভিটা বাগানসহ ৫ দাগে ২৮৫৪,২৮৫৬,২৮৫৭,২৯২২,২৭২৮ মোট সম্পত্তি ১.৪৪ একর জমি রেখে মারা য়ায়। পরবর্তীতে আমার ফুফু ফুলজান বিবির কাছ থেকে সাবেক দাগ নং ২৭০৩ হাল ২৮৫৬ ভিটা ২১২১ডেসিমেল এর মধ্যে (দক্ষিণ পশ্চিম অংশে) ৪.২৫ ডেসিমেল ১৯৭৬ সালে ভাইভাগা জমি ফয়েজ উদ্দিন ক্রয় করে বসবাস করছেন। বাকি সমস্ত জমি আমরা ভোগদখল করে আসছি। জোতবাজার নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের নোটিশ আসে আমার কাছে। যথারীতি ডিসি অফিসের সাথে আমাদের তথ্য আদান-প্রদান চলমান থাকে। ডিসি অফিস থেকে প্রাপ্ত নোটিশে উল্লেখ করেন ধারা ৮ এর(৩) (ক) নং উপধারার ভূমি অধিগ্রহণ কেস নাম্বার ২৩/২০১৭ -১৮ পরপর তিনটি নোটিশে উত্তরাধিকারী হিসাবে মরিয়ম বেগমকে অভিহিত করে গাছপালা ও অতিরিক্ত জমির মূল্যের ২০০% মূলের খতিয়ান হতে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার ও ১০০% গাছপালা মূল্যের ক্ষতিপূরণ বাবদ অতিরিক্ত ৬৯ হাজার ৭০০ টাকা এবং বাগান জমির মূল্য ও অতিরিক্ত ২০০% হিসাবে ০.০৫৫০ একর জমির মূল্য বাবদ সর্বমোট ৩৬ লক্ষ ৬ হাজার ৬শত ৯১.৯৭ টাকা গ্রহণের নিমিত্বে ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে ৩০০ টাকার নন জুড়িশিয়াল ট্যাম্পে নির্ধারিত ফরমে অঙ্গীকারনামা সহ হাজির হওয়ার আদেশ প্রদান করেন। সেখানে গিয়ে ফয়েজ উদ্দিন উক্ত জমির মালিক হিসেবে দাবি করেন কিন্তু জমির মূল দলিল বা রেকর্ড রুমে ও ভূমি অফিসে কোন তথ্য না থাকায় উভয়ের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
মান্দা উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা এস এম হাবিবুল হাসান এর কাছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হতে দলিল সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য চিঠি প্রেরণ করেন। চিঠির জবাবে তিনি জানান ৬ জুন ১৯৭০ সালের ৭৫৭৯ নং দলিলের রেকর্ড রুমে প্রয়োজনীয় তথ্য না থাকায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উত্তর প্রেরন করেন। যার স্বারক নাং ৩১.৪৩.৬৪৪৭.০১১. ০১.০০২-১৮-১৪৮৯/১৮-১৯-৪৩৬৪ তাং ২৪/১০/২০১৯ ইং এবং পরবর্তীতে স্বারক নং ৩১.৪৩.৬৪৪৭.০০০.১০.০০৭.১৫-১৯.৪৯৪৬ আলোকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব নওগাঁকে পুনরায় চিঠির জবাবে জানান, জাল দলিলের আদালতের কোন রায় না থাকায় ও দলিলটি রেকটরুমে সংরক্ষিত না থাকায় বিষয়টি আইনগত জটিলতা উল্লেখ করেন।
মরিয়ম বেগম আরো জানান, ৬৩৩/৭৬-৭৭ ও ২৪৭/১৮-১৯ নং খারিজ কেস বাতিলের জন্য আবেদন করলে দলিলটির প্রশ্ন তথ্য রেকর্ড ও ভূমি অফিসে না থাকায় আইনগত জটিলতা উল্লেখ করেন। পূর্বেই জজ আদালতে বাটোয়ারী মামলা করলে ১৫৮/৯৮ নং মামলাটি বিজ্ঞ আদালত ৬ জুন ১৯৭০ খ্রিঃ তারিখে ৭৫৭৯ নম্বর দলিলটি জাল হিসাবে গণ্য করে সাব-রেজিস্ট্রার নওগাঁ সদর কে পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে জজ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে ৮/২০০৭ নং স্বত্ব আপিল মামলা আনয়ন করেন। যা পুনঃ বিবেচনায় নিম্ন আদালতে মামলাটি শুরু করার নির্দেশ প্রদান করেন এবং মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
ফয়েজউদ্দিন মামলায় হেরে যাবার কারনে পববর্তীতে রাবেয়া, হাজেরা রাহেলা, সতীদা নামে জমি হস্তান্তর করেন। ১৫/১০/২০১৪ সালে ৯৮৭৭ নং দলিলে এই দলিলটি খারিজ করেন। উক্ত খারিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে মান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি দলিল ভুল প্রমাণিত রায় কোর্ট থেকে নিয়ে আসলে তাদের খারিজ বাতিল করবে বলে উল্লেখ করেন। এতে করে আইনে জটিলতার মধ্যে পড়ে যায় । এ সমস্যার কারণে ডিসি অফিস উভয় পক্ষকে মামলা নিষ্পত্তির পর অর্থ প্রদানের কথা জানান।
এরপর আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আদালতের মামলা চলমান করি এখনো মামলা নিষ্পত্তি হয় নাই। অথচ গত দুইদিন পূর্বে প্রতিপক্ষকে ক্ষতি পূরণের চেক হস্তান্তরের কথা জানতে পারি। আমাদের প্রতি অন্যায় ছাড়া ও আদালত অমান্য সামিল বলে মনে করি কর্মকর্তাদের প্রতি পুনরায় সঠিক তদন্ত করে ও আদালতের রায় প্রকাশের মাধ্যমে অর্থ সঠিক মালিকের হাতে হস্তান্তরের আহ্বান জানাচ্ছি।